শসার উপকারিতা ও অপকারিতা - শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়।
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা - শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব। শসা একটি খুবই উপকারী সবজি যেটি আমাদের ত্বকের জন্যও ভালো। তা ছাড়াও স্কিন কেয়ার রুটিনে শসা রাখলে এর উপকারিতা অনেক পাওয়া যায়। এজন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে শসার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।
এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে শসার আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। এজন্য আপনারা আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক।
ত্বকে শসার উপকারিতা
ত্বকে শসার উপকারিতা অনেক রয়েছে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে, যা আমাদের ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি আমাদের ত্বককে হাইড্রেটিং করতেও সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত ত্বকে শসা ব্যবহার করলে আপনারা আপনাদের ত্বকের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাবেন। নিচে ত্বকের শসার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
- যেহেতু শসার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে এজন্য এটি ত্বকে ব্যবহার করার ফলে এটি ত্বকের প্রাকৃতিক আদ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বককে হাইড্রেট করে।
- শসা শক্তিশালী অ্যাস্ট্রিংজেন্ট হিসেবে পরিচিত। এটি আমাদের ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এজন্য এটি ব্রণের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
- তোকে শসা ব্যবহার করার ফলে এটি আমাদের ত্বকে এক ধরনের শীতল ভাব অনুভব করিয়ে থাকে যা আমাদের ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে পারে।
- শসার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, যা মেলানিন উপাদানে বাধা দেয়। এজন্য তোকে শসা ব্যবহার করার ফলে এটি তোকে মেলানিনের উৎপাদন কমিয়ে উজ্জ্বল করে।
- শসার মধ্যে ভিটামিন সি থাকায় এটি আমাদের ত্বকে যেকোনো ধরনের দাগ দূর করতে পারে। তাছাড়া এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন কে যা অ্যান্টি ডার্ক সার্কেল হিসেবে পরিচিত।
- শসার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকের সুক্ষরেখা এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- শসার মধ্যে এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের ত্বকের ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে।
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা এখন জানব। শসা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। আর এই সবজিটি প্রায় সারা বছরই চাষ হয়ে থাকে। এটি অত্যন্ত সহজলভ্য এবং এটি শরীরের নানা উপকারিতার পাশাপাশি আমাদের রূপচর্চায়ও ভূমিকা পালন করে থাকে।
এজন্য আমরা আজকের এই আর্টিকেলে শসার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা সম্পর্কেও আলোচনা করব। কারণ প্রত্যেকটি জিনিসেরই উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের সকলের জেনে থাকা অত্যন্ত জরুরী।
শসার উপকারিতা
- শসাতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ওসি যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- শসার মধ্যে ৯৫ ভাগ পানি বিদ্যমান থাকায় এটি আমাদের দেহের পানির ঘাটতি পূরণ করে।
- শসার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং সিলিকন থাকায় এটি আমাদের ত্বকের পরিচর্যায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- শসার মধ্যে এরেপসিন নামক এনজাইম যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে।
- শসা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা ঠিক রাখে, যা আমাদের কিডনিকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
- শসাতে বিদ্যমান খনিজ সিলিকা আমাদের চুল এবং নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে।
- দাউদ একজিমার মত ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে শসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- শসার মধ্যে অধিক পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে যা আমাদের শরীরে হরমোনাল ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে।
- শসার বিদ্যমান পানি আমাদের দেহের পরিচয় ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে এটি আমাদের রক্ত পরিষ্কার করে এবং আলসারের মতো সমস্যা সমাধানের কাজ করে থাকে।
- শসা ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
শসার অপকারিতা
- রাতে শরীরে পানির পরিমাণ বেশি থাকে তাই রাতে শসা খেলে এটি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
- শশায় রয়েছে, কিউকারবিটিন নামক একটি উপাদান। যা আমাদের দেহে ডাইউরেটিক হিসেবে কাজ করে। তাই অতিরিক্ত শসা খেলে এটি আমাদের বারবার প্রসাবে সৃষ্টি করতে পারে।
- অতিরিক্ত শশা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। যার ফলে এটি আমাদের শরীরে হাইপারক্যালেমিয়া নামক রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
- অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে এটি আমাদের পেটে গ্যাস্ট্রিক বা ডায়রিয়ার মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
চোখে শসা দিলে কি হয়
চোখে শসা দিলে কি হয় এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। শসাই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দরকারি ভিটামিন ও খনিজ। যে সকল উপাদান আমাদের শরীরের জন্য যেমন উপকারী তেমনি এগুলো দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও কার্যকরী। চোখের যত্নে অন্যতম কার্যকরী উপাদান হিসেবে শসাকে ধরা হয়ে থাকে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক চোখের উপর শসা দিলে কি হয় সেই সম্পর্কে।
- শসার মধ্যে রয়েছে অ্যাসকরবিক ও ক্যাফেইক অ্যাসিড, যা চোখে দেওয়ার ফলে এটি আমাদের চোখের ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- শসায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও সিলিকা যা আমাদের চোখের নিচে কালো দাগ দূর করে থাকে।
- শসা একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। যা চোখের চারপাশে শসা দিয়ে রাখলে এটি আমাদের ত্বকটকে যাওয়া ও বলিরেখা দূর করে।
- শসার পেস্ট বানিয়ে তার মধ্যে মধু এবং ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে চোখের নিচে হালকা করে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট পরে। এটি ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলার ফলে এটি চোখের নিচের চামড়া ঝুলে পড়া ঠেকাতে সাহায্য করে থাকে।
- চোখে শসা দেওয়ার ফলে এটি চোখের চারপাশের টিস্যু কে হাইড্রেট করে।
- দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপ অফ মোবাইলে কাজ করার পরে চোখের উপর শসার টুকরা রাখতে পারেন। এতে আপনার চোখের ক্লান্তি দূর হবে।
শসা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ হচ্ছে খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে এই সমস্যা তীব্র হয়ে থাকে। যার ফলে তাদের ত্বকের সৌন্দর্যতা নষ্ট হয়ে যায়। আর আমরা এই ব্রণ থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ফেসওয়াশ ব্যবহার করে থাকি। তবে আপনারা অনেকেই জানেন না শসা দিয়ে খুব সহজেই ব্রণ দূর করা যায়। শসা ব্রণের সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। নিচে শসা দিয়ে ব্রন দূর করার উপায় সম্পর্কে রচনা করা হলোঃ
- প্রথমত আপনারা শশাকে ভালোমতো থেতলে মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এরপর বিশ মিনিট পর আপনার মুখটা ভালো মতো ধুয়ে ফেলুন। শসাতে থাকা ভিটামিন এ, ডি এবং ই আমাদের ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- একটি শসা ব্লেন্ডারের ভালোমতো ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর তার মধ্যে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এরপর সেই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে 20 মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুই তিন বার এই প্যাকটি ব্যবহার করার ফলে এটা আমাদের ব্রণের সমস্যা দূর করবে।
- শসা এবং টমেটো সমপরিমাণ নিয়ে ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেই তৈরিকৃত পেস্টটি ত্বকের ব্রণের ওপর লাগিয়ে 15 মিনিট অপেক্ষা করুন। অতঃপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহার করার ফলে এটি আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করবে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।
- একটি সংসার পেস্ট তৈরি করে তার মধ্যে দুই চা চামচ দই মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এরপর সেই একটি মুখে লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট রাখুন। অতঃপর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ ভালোমতো ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ব্যবহার করার ফলে এটি ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখবে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।
শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে আমরা এখন জানবো। ত্বকের যত্নে সসার ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। এটি আমাদের ত্বককে সতেজ রাখে। তবে ত্বক ফর্সা করার জন্য শসা ব্যবহারের কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানা নেই। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আপনার আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে-
- মুখের কালো দাগ পড়লে শসার রস মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। নিয়মিত এটি ব্যবহার করার ফলে এটি আপনার ত্বকের কালো দাগ দূর করবে এবং আপনার ত্বককে প্রাকৃতিক ভাবে ভরসা করতে সাহায্য করবে।
- শসার রসের মধ্যে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে মেখে ২০ মিনিট মতো রেখে দিন। এরপর মুখ শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখকে ভালোমতো ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ব্যবহার করার ফলে এটি আপনার মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
- শসা কে পাতলা পাতলা করে কেটে মুখে ঘসে নিতে পারেন। এরপর আপনার ত্বক শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। এভাবে এটি আপনার ত্বকের রং ফর্সা করতে সাহায্য করবে।
- শসার রসের সাথে মধু এবং দই মিশিয়ে একটি ফেস মাস্ক তৈরি করে নিয়ে। সেই মাছটি ত্বকের ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে এটি আপনার ত্বককে প্রাকৃতিক ভাবে ফর্সা করতে সাহায্য করবে।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা শসার উপকারিতা ও অপকারিতা - শসা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি যেগুলো আপনাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পৃক্ত। এজন্য আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা যদি এ ধরনের আরও নিত্য নতুন পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন। আপনাদের যদি কোন ধরনের মন্তব্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url