নিওবেট ক্রিম এর কাজ, এর উপকারিতা এবং এর দাম কত। আপডেট তথ্য
নিওবেট ক্রিম এর কাজ, এর উপকারিতা এবং এর দাম কত সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। আপনারা হয়তো এই বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘুরে দেখেছেন। কিন্তু এই বিষয়ে হয়তো সঠিক কোন তথ্য পাচ্ছেন না, তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের আর্টিকেলে আমরা উক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
সেই সাথে আমরা আজকের আর্টিকেলে নিওবেট ক্রিম এর আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। এই জন্য আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
নিওবেট ক্রিম এর দাম কত
বর্তমানে আমাদের দেশে নিউ বাইক ক্রিম এর ১৫ গ্রাম টিউব এর দাম ৩৫ টাকা করে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন দোকানে এর দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে। তবে আপনারা এই ক্রিমটি ৩৫ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।
নিওবেট ক্রিম এর কাজ
নিওবেট ক্রিমটি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড দারা তৈরিকৃত একটি ক্রিম। এই ক্রিমটি বিটামিথাসন ও নিওমাইসিন সালফেট সমন্বয়ে তৈরী। এই ক্রিমটি সাধারণত পুড়ে যাওয়া, আঘাত এবং ক্ষতস্থানে চর্ম সংস্থাপনে, বহিঃকর্ণের প্রদাহে, নিউরোডার্মাটাইটিসে, একজিমায় ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এছাড়াও এই ক্রিমটি নিম্নলিখিত উপসর্গে কাজ করে থাকে। সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- এই ক্রিমটির মধ্যে থাকা বিটামিথাসন হলো একটি কর্টিকোস্টেরয়েড, যা আমাদের ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং সোরিয়াসিস ধরণের চর্মরোগ এর সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- এই ক্রিমটির মধ্যে রয়েছে নিওমাইসিন সালফেট। এটি আমাদের ত্বকে অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে, যেটি ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
- এই ক্রিমটি ব্যবহার করার ফলে এটি আমাদের শরীরে চুলকানির সমস্যা দ্রুত কমিয়ে আনতে সাহায্য করে থাকে।
- তাছাড়াও এই ক্রিমটি আমাদের ত্বকে নতুন কোষের গঠনে সহায়তা করে থাকে। যার ফলে এটি আমাদের শরীরে ক্ষতস্থানকে দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে।
- সোরিয়াসিস ও অ্যালার্জিক ডার্মাটাইটিসের কারণে হাওয়া চুলকানির সমস্যা কমাতে এই ক্রিমটি সাহায্য করে থাকে।
নিওবেট ক্রিম এর উপকারিতা
নিওবেট ক্রিম এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আমরা এখন এই ক্রিমটি ব্যবহার করার ফলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায় সে সকল সম্পর্কে আপনাদের সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। নিচে এই ক্রিমটির উপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- এই ক্রিমটি ব্যবহার করার ফলে এটি আমাদের শরীরে এলার্জির কারণে হওয়া চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।
- ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে এই ক্রিমটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- পোড়া ও আঘাতের কারণে হওয়া ক্ষতস্থানে এটি ব্যবহার করার ফলে এটি সেখানে ক্ষতস্থান সরিয়ে নতুন চামড়া তৈরিতে সাহায্য করে থাকে।
- এই ক্রিমটি আমাদের শরীরে ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং অন্যান্য চর্ম রোগের প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- এছাড়াও এটি আমাদের শরীরে আঘাত জনিত কারণে কেটে যাওয়া স্থানকে ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে।
- এই ক্রিমটি অস্ত্র প্রচারের পরবর্তী সংক্রমণ নিরাময়ে কাজ করে থাকে।
নিওবেট ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম
আমরা অনেকেই আছি যারা নিওবেট ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানিনা বা জানা নেই। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। এই পর্বে আপনারা নিওবেট ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। নিচে এই ক্রিমটি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ
- এই ক্রিমটি আক্রান্ত স্থানে পাতলা করে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার ব্যবহার করতে হবে।
- দীর্ঘমেয়াদি এই ক্রিমটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ৭ দিনে একবার ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।
- এছাড়াও এটি ব্যবহারের সঠিক সময়সীমা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে।
- এই ক্রিমটি এক বছরের নিচে শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না।
- তাছাড়াও এই ক্রিমটি এক বছর থেকে বেশি বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে পাঁচ দিনের বেশি এটি ব্যবহার করা উচিত নয়।
নিওবেট ক্রিম এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
নিওবেট ক্রিমটি সাধারণত আমাদের শরীরে চুলকানির মত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। তবে এই ক্রিমটি দীর্ঘদিন এবং অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করার ফলে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেসকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জেনে থাকা অত্যন্ত জরুরি।
এই ক্রিমটি সাধারণ মাত্রায় ব্যবহার করার ফলে এটি আমাদের শরীর ভালোভাবেই শোষণ করে। কিন্তু অতিমাত্রায় ব্যবহার করার ফলে এটি যে সকল সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে সেগুলো হলঃ
- কুশিং সিনড্রোম
- মুখ লালচে ভাব
- একনি
- ত্বক জ্বালাপোড়া
এই সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াও অক্লুসিভ ড্রেসিং ব্যবহারে রক্তনালী প্রসারিত এবং পাতলা হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত সংবেদনশীল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে এটি ব্যবহার করা বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নিওবেট ক্রিম কি চোখের কালো দাগ দূর করে
নিওবেট ক্রিমটি বিটামিথাসন ও নিওমাইসিন সালফেট এর সমন্বয় তৈরিকৃত একটি ক্রিম। যেটি আমাদের ত্বকে চর্মরোগ জনিত সংক্রমণ, চুলকানি ও অ্যালার্জি দূর করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এখন আপনারা জানতে চেয়েছেন এটি ব্যবহার করার ফলে এটি কি চোখের কালো দাগ দূর করতে পারে সেই সম্পর্কে।
তবে এর উত্তর হচ্ছে না, কারণ এই ক্রিমটির মধ্যে থাকা বিটামিথাসন (০.১%) মধ্যে থাকা আমাদের ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে ঠিকই। কিন্তু এটি দীর্ঘসময় ব্যবহার করলে এটি আমাদের ত্বকের স্তর পাতলা করে দিতে পারে।
তাছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে নিওমাইসিন সালফেট (০.৫%) যা আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। এজন্য এই তিনটি চোখের চারপাশে ব্যবহার করলে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
যার ফলে আমাদের ত্বক পাতলা হয়ে যেতে পারে, ত্বকে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে তাছাড়াও চোখের চারপাশ জ্বালাপোড়া করতে পারে। এজন্য আমরা বলতে পারি যে, নিওবেট ক্রিমটি চোখের কালো দাগ দূর করতে পারে না।
আর এজন্য আপনাদের চোখের কালো দাগ দূর করার জন্য অন্য কোন পদ্ধতি বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়াও চোখের চারপাশের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনারা চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা নিওবেট ক্রিম এর কাজ, এর উপকারিতা এবং এর দাম কত সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আপনারা আজকের আর্টিকেল আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন যেগুলো আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের আরো নিত্যনতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। কারণ আমরা এখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাংলা আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করে থাকি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url