ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি।

ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্ক নিয়ে আমরা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব। আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইউটিউব সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ইউটিউব মার্কেটিং কি
আমরা আজকের এই আর্টিকেলে উক্ত বিষয় সহ আরোও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। এই জন্য আপনারা আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করুন।

ইউটিউব মার্কেটিং কি

সাধারণ ভাষায় আমরা মার্কেটিং বলতে বুঝি যে কোন পণ্যের প্রচারণা। আর সে সকল পণ্য ইন্টারনেটে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং বলে থাকি। আর এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম আরেকটি শাখা হচ্ছে ইউটিউব মার্কেটিং।

ইউটিউব মার্কেটিং টি হলো ইউটিউব প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কোন পণ্য, সেবা, ব্র্যান্ড বা ব্যক্তিগত ব্রান্ডের প্রচার-প্রচারণা চালানোকেই ইউটিউব মার্কেটিং বলা হয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে ইউটিউব এর মাধ্যমে মানুষের কাছে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পণ্য অথবা সেবা প্রচারণা করাই হলো ইউটিউব মার্কেটিং।

আর এই ইউটিউব মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরনের দিক রয়েছে সে সকল দিকের মধ্যে প্রধান কিছু দিকগুলো হলোঃ
  • ভিডিও কনটেন্ট তৈরি
  • চ্যানেল ম্যানেজমেন্ট
  • এসইও (SEO) করা
  • প্রমোশন ও বিজ্ঞাপন
  • কমিউনিটি বিল্ড আপ
  • অ্যানালিটিক্স ব্যবহার

ইউটিউব মার্কেটিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়

আপনারা ইতিপূর্বেই ইউটিউব মার্কেটিং কি সে সম্পর্কে জেনে কি নিয়েছেন। এখন ইউটিউব মার্কেটিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আর ইউটিউব মার্কেটিং এর বিষয়ে যদি আপনাদের সঠিক ধারণা না থাকে তাহলে ইউটিউব মার্কেটিং করা সম্ভব হবে না।

ইউটিউব মার্কেটিং করতে হলে আপনাদের কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। যেগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনারা ইউটিউব মার্কেটিংয়ের কাজ খুব সহজেই করতে পারবেন। তাহলে চলুন এবার ইউটিউব মার্কেটিং এর সেই ধাপগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল তৈরি: প্রথমত আপনাদের একটি প্রফেশনাল আপনার ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের নামে youtube চ্যানেল তৈরি করতে হবে। যেখানে একটি সুন্দর প্রোফাইল পিকচার, কভার ফটো এবং চ্যানেলের ডিস্ক্রিপশন দিন। এরপর আপনার ব্র্যান্ডের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ একটি ইউনিফর্ম লোক তৈরি করুন।
  • ভালো কনটেন্ট তৈরি করুন: আপনার টার্গেট থাকবে অডিয়েন্স এর কাছে বিভিন্ন ধরনের তথ্যবহুল, মজার এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান এর ভিডিও তৈরি করা। আপনার ভিডিও কোয়ালিটি গুলো ভালো এবং স্পষ্ট অডিও এডিট করার চেষ্টা করুন। আপনাদের ভিডিওর শুরুতে পাঁচ থেকে দশ সেকেন্ড এর মধ্যে দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।
  • আপনার ভিডিওগুলো এসইও (SEO) করুন: এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। আর আপনার ভিডিওগুলো ইউটিউবে প্রথমদিকে আনার জন্য আপনাকে যে কৌশল অবলম্বন করতে হবে সেটি মূলত এসইও। আর এজন্য আপনার ভিডিওগুলো সঠিকভাবে এসইও করার মাধ্যমে আপলোড করুন। তাহলে আপনারা দ্রুত অধিক সংখ্যক ভিউ পেতে পারবেন।
  • নিয়মিত কনটেন্ট বা ভিডিও আপলোড করুন: আপনাদের ইউটিউব মার্কেটিং এর কাজে সফলভাবে করতে চাইলে আপনারা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট বা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করুন। সেই সাথে আপনারা আপনাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে আপনাদেরাও আপনার ইউটিউব চ্যানেলের প্রতি সক্রিয় হবে।
  • আপনার ভিডিওগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রমোট করুন: যে কোন ব্যবসা বা পণ্য প্রচারণার জন্য আপনাকে মনোযোগই হতে হবে। এজন্য আপনারা আপনাদের ইউটিউবের মার্কেটিং বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন: ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, ব্লগ, ওয়েবসাইট ইত্যাদি গুলোতে প্রচার করুন।
  • ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করুন: আপনারা ইউটিউবে এনালিটিক্স ব্যবহার করে আপনার কোন ভিডিও গুলো কেমন পারফর্ম করছে সেগুলো দেখতে পারবেন। সেই সাথে আপনারা কোন কনটেন্ট এ বা কোন ভিডিওতে বেশি ভিউ, রিএকশন এবং সাবস্ক্রিপশন পাচ্ছেন সেগুলো বুঝতে পারবেন। এরপরে আপনারা সেই ধরনের আরো বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করুন।

ইউটিউব থেকে আয় করার পদ্ধতি

একটি রিপোর্ট থেকে জানতে পারা গেছে যে বর্তমান সময়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ কোটি মানুষ নিয়মিত ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকে। আর যেহেতু ইউটিউব একটি খুবই জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সেহেতু ইউটিউব কর্তৃপক্ষ এখানে আপনাদের ইনকাম করারও সুযোগ করে দিয়েছে।
ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি
আর এখানে আপনারা বিভিন্ন উপায়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করার সুযোগ পাবেন। আর তার মধ্যে আজকে আমরা ইউটিউব থেকে আয় করার পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। তাহলে চলুন এবার ইউটিউব থেকে আয় করার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • এডসেন্স ও মনিটাইজেশন: আপনার youtube চ্যানেলটিতে এডসেন্স বা মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন চালিয়ে খুব সহজেই ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে পারবেন। আর দরকার হবে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কয়েক হাজার সাবস্ক্রাইবার।
  • স্পন্সরশিপ ও ব্র্যান্ড ডিলের মাধ্যমে: আপনার ইউটিউব চ্যানেলে যদি অধিক সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার থেকে থাকে। তাহলে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি ও ব্র্যান্ড তাদের পণ্য বা সার্ভিস আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করার মাধ্যমে আপনাকে টাকা দেবে। যার মাধ্যমে আপনারা youtube থেকে খুব সহজে ইনকাম করতে পারবেন।
  • ইউটিউবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: আপনারা ইউটিউব চ্যানেলে অন্য কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রচার করার মাধ্যমে তাদের থেকে কিছু পরিমাণ কমিশন এর মাধ্যমে খুব সহজে ইনকাম করতে পারবেন।
  • নিজস্ব পণ্য ও সার্ভিস বিক্রি করে ইনকাম: আপনারা চাইলে আপনাদের ইউটিউব চ্যানেলে নিজের বানানো কোর্স ও বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস ভিডিও আকারে তৈরি করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।
  • মেম্বারশিপের মাধ্যমে ইনকাম: আপনার ইউটিউব চ্যানেলে যদি যথেষ্ট পরিমাণে সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ আসে তাহলে আপনারা আপনার ইউটিউব চ্যানেলে মেম্বারশীপ চালু করতে পারবেন। যার ফলে দর্শকরা আপনাকে মাসিক ফিরিয়ে চ্যানেলের এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট উপভোগ করতে পারবে।
  • ইউটিউব প্রিমিয়াম ব্যবহার করে ইনকাম: আপনার চ্যানেলে যখন যথেষ্ট সংখ্যক সাপটা এবার থাকবে তখন আপনি চাইলে youtube প্রিমিয়াম এর সাইন আপ করতে পারেন। এর ফলে আপনার সাবস্ক্রাইবাররা যদি বিজ্ঞাপন ছাড়া আপনার ইউটিউবে ভিডিও দেখতে চায় তাহলে তাদের প্রিমিয়াম সাবস্ক্রাইব করতে হবে টাকার বিনিময়ে। আর এখান থেকে ইউটিউবাররাও ইনকাম করতে পারে।

ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়

ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায় এই বিষয়টি নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপর। আর সে সকল বিষয়গুলো হলো আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও গুলোতে কত সংখ্যক ভিউ, সিপিসি (CPC) বা সিপিএম (CPM) রেট, কন্টেন্টের ধরণ, অডিয়েন্স লোকেশন, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়গুলোর ওপ।

তবে সাধারণভাবে হিসাব করতে গেলে শুধুমাত্র ইউটিউব এডসেন্স থেকে দশ হাজার ভিউতে ৫ থেকে ২০ ডলার, ১ লাখ ভিউতে ৫০ থেকে ২০০ ডলার এবং ১০ লাখ ভিউয়ে ৫০০ থেকে ২০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। অর্থাৎ আমরাও বলতে পারি যে, আপনার ভিডিওতে ভিউয়ের পরিমাণ যত বেশি হবে।

আপনি youtube থেকে তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও যদি আপনার ভিউয়ার আমেরিকা বা ইউরোপ দেশ থেকে বের করে তাহলে আপনারা প্রতি এক হাজার ভিউয়ে ৫ থেকে ২০ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। তাই ইউটিউবে যার যত বেশি ভিউ হবে তার তত বেশি ইনকাম হবে।

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়

ইউটিউব থেকে টাকা তুলতে হয় কিভাবে এ বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আপনারা অনেকেই রয়েছেন যারা ইউটিউবে কাজ করে থাকেন। তবে ইউটিউব এর ইনকাম প্রিত টাকা কিভাবে তুলতে হয় এ বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের জানা নেই।
ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়
তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ইউটিউব থেকে টাকা তোলার জন্য বেশ কিছু ভাব অনুসরণ করতে হবে। তাহলে চলুন এবার সেই সকল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
  • প্রথমত আপনাদের ইউটিউব মনিটাইজেশন চালু করতে হবে। যদি আপনার চ্যানেলে অন্তত ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ঘন্টায় ৪০০০ ভিউ হয়ে থাকে তাহলে আপনারা youtube পার্টনার প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন।
  • আপনারা ইউটিউব থেকে যে টাকা উপার্জন করবেন তা মূলত গুগল এডসেন্স একাউন্টে জমা হয়। আর এই জন্য আপনাদের ইউটিউব চ্যানেলের সাথে একটি গুগল এডসেন্স একাউন্ট যুক্ত করতে হবে।
  • এরপর এডসেন্সে আপনার ঠিকানা একটি ভেরিফিকেশন পিন পাঠাবে। সেটি দিয়ে আপনার ঠিকানাটি ভেরিফাই করতে হবে।
  • এরপরে আপনার ব্যাংক একাউন্টের তথ্য দিতে হবে যাতে আপনি সরাসরি সেই টাকাগুলো ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারেন।
  • আর সাধারণত আপনার একাউন্টে যখন ১০০ ডলার জমা হবে তখন আপনার এডসেন্স থেকে টাকা পাঠানোর অনুমতি দিবে।
এভাবেই আপনারা আপনাদের ইউটিউব থেকে খুব সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে আপনাদের ইউটিউব থেকে গুগল এডসেন্সে এবং সেই গুগল এডসেন্স থেকে আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা চলে আসবে।

আমাদের শেষ কথা

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমরা আপনাদের মাঝে এই বিষয়টি নিয়ে সঠিক ধারণা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আর এছাড়াও আমরা আজকের এই আর্টিকেলে ইউটিউব সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছি।

আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনাদের মতামত আমাদের কমেন্ট বক্সে গিয়ে জানাবেন। সেই সাথে এই ধরনের আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল করার জন্য আমার এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং আমাদের সাপোর্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url